ইবনে বতুতার ভ্রমণ কাহিনি
পৃষ্ঠা ১ থেকে ১০
পৃষ্ঠা:০১
যাত্রা শুরু: কিছু মানুষ আছে যারা আর দশজনের মতো নয়। তারা শুধু আরামে আয়েশে, আমোদ- ফুর্তি করে জীবন কাটিয়ে দিতে চায় না। তারা নতুন কিছু করতে চায়, অজানাকে জানতে চায়, পৃথিবীটাকে দেখতে চায়। তারা অরণ্য, মরুভূমি, পাহাড়-পর্বতে অভিযান করে, সাগর পাড়ি দেয়, শূন্যে-মহাশূন্যে উড়তে চায়। অজানাকে জানা, অসম্ভবকে সম্ভব করায় তাদের অদম্য আগ্রহ। এতে তাদের অনেক বিপদ-আপদে পড়তে হয়। অনেকে মৃত্যুবরণ করে। কিন্তু কোনোকিছুতেই তারা দমে না। তারা মানুষকে এগিয়ে নিয়ে যায়, আমাদের জ্ঞান প্রসারিত করে, সভ্যতার আলোকবর্তিকা বহন করে। এমনই একজন মানুষ ছিলেন আবু আবদুল্লাহ মোহাম্মদ ইবনে বতুতা। তাঁকে আমরা সাধারণভাবে ইবনে বতুতা বলেই জানি। জন্ম তাঁর মরক্কো দেশে তানজিয়ার শহরে, ১৩০৪ সনে। তাঁর বাবা ছিলেন একজন কাজি (বিচারক) মরক্কোর একটি ছোট শহরে। বতুতাও আইন ও ধর্মশাস্ত্রে শিক্ষালাভ করে কাজি হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। কিন্তু প্রথম থেকেই বতুতার আকর্ষণ ছিল ভ্রমণে। তিনি দূর দেশ, অজানা জগতের স্বপ্ন দেখতেন। তাই তাঁর বয়স যখন মাত্র একুশ, তিনি বাড়ি ছেড়ে অজানার পথে পা বাড়ালেন, যেমন একটি পাখি তার বাসা ছেড়ে আকাশে পাখা মেলে। সারা জীবন তিনি
পৃষ্ঠা:০২
ঘুরে বেড়ালেন দেশ দেশান্তরে। তাঁর যাত্রাপথে তিনি গেলেন মিশর, সিরিয়া, ইরাক, আরব, প্যালেস্টাইন, তুরস্ক, রাশিয়া, ইরান, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, চীন ও আরো অনেক দেশে। সেকালে দেশভ্রমণ ছিল অত্যন্ত কঠিন ও বিপদসংকুল। লোকেরা চলত উট অথবা ঘোড়ার পিঠে অথবা পায়ে হেঁটে। পথ ছিল বন্ধুর এবং তাতে ছিল ডাকাত বা দস্যুদের ভয়। বতুতার কাছে যথেষ্ট টাকাকড়িও ছিল না। কিন্তু এসব অসুবিধার সম্মুখীন হওয়ার মনোবল ছিল তাঁর অফুরন্ত। বতুতা তানজিয়ার থেকে রওনা হলেন ১৩২৫ সনের জুন মাসে মক্কাগামী একদল হজ্জযাত্রীর সঙ্গে। তিনি ব্যবসায়ীদের একটি কাফেলায় অগ্রসর হলেন মিশরের দিকে। মরুভূমির আবহাওয়া ছিল অসহনীয় গরম। তাঁর অনেক সঙ্গী-সাথীঅসুস্থ হয়ে পড়লেন এবং কেউ কেউ মারাও গেলেন। বতুতা নিজেও ভয়ানক রোগাক্রান্ত হয়ে পড়লেন।
পৃষ্ঠা:০৩
তাঁর এক বন্ধু তাঁকে পরামর্শ দিলো তাঁর গাধাটি ও ভারী জিনিসপত্র বিক্রি করে দিতে। বস্তুতাও তাই করলেন এবং ঘোড়ার পিঠে চলতে থাকলেন। একসময় তিনি প্রবল বৃষ্টিতে ভিজে জ্বরে আক্রান্ত হলেন। প্রায়ই তিনি অর্ধ-অচেতন থাকতেন। তা সত্ত্বেও তিনি চলতেই থাকলেন। তাঁর সঙ্গীরা তাঁকে ঘোড়ার পিঠে বেঁধে দিলেন, যাতে তিনি পড়ে না যান। কিছুদিন পর তাঁরা পৌঁছালেন তিউনিসে। বহু নগরবাসী তাঁদের কাফেলা দেখে তাঁদেরকে অভ্যর্থনা করতে আসলেন। কিন্তু বতুতার মনে দুঃখ-তাঁর পরিচিত কেউ তাঁকে অভ্যর্থনা জানাতে আসল না। কারণ সেখানে কেউ তাঁকে চিনত না। তারপর হেজাজগামী এক নতুন কাফেলা তৈরি হলো। বতুতা তাদের কাজি হিসেবে নিযুক্ত হলেন। বহরে ছিল একশোর ওপরে লোক যাদের মধ্যে কয়েকজন ছিল তিরন্দাজ।
পৃষ্ঠা:০৪
এজন্য কোনো দস্যুদল তাঁদেরকে আক্রমণ করতে সাহস পেতো না। তাঁরা সুসা, সাফকেছ এবং কাবুস নগরীর মাঝ দিয়ে এগুতে থাকলেন। ৫ এপ্রিল ১৩২৬ তাঁরা আলেকজান্দ্রিয়াতে পৌছালেন। আলেকজান্দ্রিয়া সেকালে ছিল একটি বর্ধিষ্ণু শহর। এর ছিল চারটি বিশাল প্রবেশ পথ। এটা ছিল একটি বন্দর নগরী সেকালের পৃথিবীর একটি বৃহত্তম নগরী। এর ছিল একটি সুউচ্চ বাতিঘর। এর একটি অত্যাশ্চর্য দর্শনীয় বস্তু ছিল এক বিরাট মার্বেল পাথরের মিনার। এর ওপরে ছিল সুদৃশ্য কারুকার্য আর এর ভিত্তি ছিল এক বর্গাকৃতি প্রস্তরখণ্ড। বতুতা এ নগরীর অনেক ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে দেখা করলেন। তাঁদের একজন তাঁকে পরামর্শ দিলেন তিনি যেন অবশ্যই ভারত ও চীন ভ্রমণ করেন।
পৃষ্ঠা:০৫
এরপর বতুতা কায়রোতে পৌঁছালেন। কায়রো ছিলো সেকালে পৃথিবীর সকল নগরীর শ্রেষ্ঠ। এককালে কায়রো ছিলো বিখ্যাত ফেরাউনদের রাজধানী। একটি অত্যন্ত উর্বর ও ফলবান এলাকার মাঝখানে ছিলো এই শহর। এখানে ছিলো অনেক সুন্দর সুন্দর ইমারত। পৃথিবীর নানা দেশ থেকে অসংখ্য লোক এখানে জমা হতো। শহরে পানি সরবরাহের জন্য ছিলো ১২০০০ ভিস্তিওয়ালা, ৩০০০০ গাধা ও খচ্চর এবং নীল নদের ওপর ৩৬০০০ নৌকা। চারদিকে ছিলো বিস্তীর্ণ আবাদি জমি এবং নদীর তীর দিয়ে সুদৃশ্য ইমারতশ্রেণি। দৈর্ঘ্য, ব্যবহার ও সুস্বাদু পানির জন্য এই নীল নদ ছিলো পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ একটি নৌপথ। এ নদীর একটি বৈশিষ্ট্য ছিলো যখন গ্রীষ্মকালে অন্যান্য নদী শুকিয়ে যেতো, তখন নীল নদে দেখা দিতো প্লাবন। এই প্লাবনের বারিরাশি ও পলিমাটি মিশরকে করেছিলো পৃথিবীর সবচাইতে উর্বর একটি দেশ।
পৃষ্ঠা:০৬
মক্কার পথে: কায়রো থেকে বতুতা লোহিত সাগর পার হয়ে হেজাজ বন্দরে পৌঁছালেন। তীর্থযাত্রীদের দল আবার মরুপথে অগ্রসর হলো। প্রথম যাত্রা বিরতি করলো হুমায়থিরা নামক একটি স্থানে, যেখানে ছিলো হায়েনাদের উপদ্রব। সারারাত তাঁরা এই হায়েনাদের তাড়াতে ব্যস্ত ছিলেন। কিন্তু তার মধ্যেও হায়েনারা এক বস্তা খেজুর নিয়ে পালিয়ে গেলো। পরদিন সকালে এক জায়গায় ঐ বস্তাটি ছিন্নভিন্ন অবস্থায় দেখতে পাওয়া গেলো। এর অধিকাংশ খেজুর হায়েনারা খেয়ে ফেলেছিলো। এরপর বতুতার দল একটি অঞ্চল দিয়ে এগুতে থাকলেন যেখানকার অধিবাসীরা ছিলো কৃষ্ণকায়। এক সময় তাঁরা একটি জায়গায় পৌঁছালেন যেখানে চলছিল এক ভয়ানক যুদ্ধ। যাত্রীরা পথ পরিবর্তন করে রওনা হলেন সিরিয়ার দিকে। কয়েকদিন ভ্রমণের পর তাঁরা পৌছালেন গাজায়। এই গাজা ছিলো মিশর সীমান্তের অপর পারে সিরিয়ার প্রধান শহর। এখন বতুতা গেলেন জেরুজালেমে যা তখনকার দিনে ছিলো মুসলমানদের তৃতীয় পবিত্রতম শহর, মক্কা ও মদীনার পরই। এখানকার আল-আকসা মসজিদ ছিলো নির্মাণশৈলীর এক অপূর্ব নিদর্শন। এর ছাদ ছিলো অপূর্ব কারুকার্যময় স্বর্ণ ও নানা বর্ণে শোভিত। এই নগরীর আর একটি সুদৃশ্য ও সুদৃঢ়ভাবে নির্মিত সৌধ হচ্ছে ডোম অব দ্য রক। এর ছিলো মার্বেল নির্মিত সোপানশ্রেণি। এই সৌধের অধিকাংশ ছিলো স্বর্ণ নির্মিত, যা বিদ্যুতের মতো চমকাতো!
পৃষ্ঠা:০৭
এরপর বতুতা গেলেন সিরিয়া দেশের ত্রিপলি ও তারপর আলেপ্পো ও এ্যান্টিওকে। দীর্ঘযাত্রা শেষে তিনি পৌঁছালেন দামেস্কে। অপূর্ব সুন্দর ছিলো এই নগরী। বহু মসজিদ, ধর্মশালা, বিদ্যালয় ও স্মৃতিসৌধে পরিপূর্ণ ছিলো এই নগরী। সবচাইতে বিস্ময়কর ছিলো উমাইয়া রাজত্বকালে খলিফা প্রথম ওয়ালিদ নির্মিত মসজিদটি। খলিফা কনস্টান্টিনোপলের রোমান সম্রাটকে অনুরোধ করে পাঠিয়েছিলেন তাঁর জন্য দক্ষ কারিগরদের একটি দলকে তাঁর কাছে পাঠাতে। সম্রাট তাঁকে ১২০০০ লোকের একটি দল পাঠিয়ে দিলেন। মসজিদটির ছিলো ৪টি দরজা এবং অনেক অলিন্দ যেখানে বহু বস্তু ব্যবসায়ী, গহনা বিক্রেতা, পুস্তক বিক্রেতা, কাচের বাসনাদি বিক্রেতা, মনিহারী দ্রব্যাদির বিক্রেতা, মোমবাতি বিক্রেতা তাদের পসরা সাজিয়ে বসতো। তারপর বতুতা এলেন বসরা বন্দরে চারদিনের যাত্রা বিরতির জন্য। পথে কাফেলা অতিক্রম করলো আল উখাইদির উপত্যকা, যা নাকি দোজখের উপত্যকা বলে পরিচিত ছিলো। কোনো একসময়ে তীর্থযাত্রীর দল পড়লো সিমুম ঝড়ের কবলে। তাদের পানির সরবরাহ শেষ হয়ে গেলো। কাউকে কাউকে একবারের খাবার পানির দাম দিতে হলো এক হাজার দিনার। তারপর হয়তো ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়েই মারা গেলো। অতি দ্রুততার সঙ্গে দিনরাত্রি বিরামহীনভাবে চলে বতুতার কাফেলা এই মরু অঞ্চল অতিক্রম করলো।
পৃষ্ঠা:০৮
আরও অনেক ভ্রমণের পর বতুতা পবিত্র নগরী মদিনাতে পৌঁছালেন। তিনি হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কবরের পাশের বাগানে নামাজ পড়লেন। যে খেজুর বৃক্ষের কাণ্ডে ঠেস দিয়ে নবীজী নসিহত করতেন, তাকে তিনি স্পর্শ করলেন। নানা ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানেরমধ্য দিয়ে মদিনায় চারদিন অতিবাহিত করলেন। মক্কা নগরীর পাঁচ মাইলের মধ্যে পৌছে বতুতা তাঁর সেলাই করা কাপড়চোপড় পরিবর্তন করলেন। কখনো খেজুর বাগান এবং প্রবহমান ঝরনা সমৃদ্ধ গ্রাম, আবার কখনো বালুকাময় বিরানভূমি পার হয়ে তিনি মক্কায় পৌঁছালেন। বতুতা দেখলেন মক্কার অধিবাসীরা অত্যন্ত কোমল হৃদয় ও উদারমনা। অনাথ ও দরিদ্রদের জন্যে তাঁদের ছিল অগাধ সহানুভূতি। কারও যদি একটি মাত্র রুটি থাকে, তবে অভুক্তদের জন্য তিনি এর অর্ধেকটা অবলীলাক্রমে দান করে দিতেন। মক্কার অধিবাসীরা সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন পোশাক পরতে ভালোবাসতেন। অধিকাংশ লোকের পোশাকই সাদা এবং সবসময়ই পরিচ্ছন্ন। তাঁরা সুগন্ধি দ্রব্য ও সুরমা ব্যবহার করতেন এবং সারাক্ষণই দাঁত খিলাল করতেন। মক্কার রমণীরা ছিলেন অপূর্ব সুন্দরী এবং খুবই ধর্মপরায়ণা ও বিনয়ী। তাঁরাও ছিলেন সুগন্ধী দ্রব্যের অত্যন্ত অনুরাগী। সুগন্ধী দ্রব্য কিনতে দরকার হলে একরাত্রি না খেয়ে থাকতেও তাঁরা রাজি ছিলেন।
পৃষ্ঠা:০৯
নানা দেশ নানা জাতি: মক্কা অতিক্রম করে বতুতা কুফা, বসরা, আবাদান হয়ে ইস্পাহানে পৌঁছালেন। পথে সুলতান আতাবেগের রাজধানী ইদহাজ শহরে এক অবিস্মরণীয় অভিজ্ঞতা লাভ করলেন। তিনি সুলতানের দর্শনপ্রার্থী হলেন। কিন্তু তা খুব সহজ কাজ ছিল না; কারণ সুলতান শুধু শুক্রবারে লোকজনকে দেখা দিতেন। অন্যান্য দিনে প্রায় সর্বক্ষণই তিনি মাতাল হয়ে থাকতেন। দু-একদিনঅপেক্ষার পর বতুতাকে নিয়ে যাওয়া হলো সুলতানের সামনে এবং একটি গালিচায় তাঁকে বসতে দেওয়া হলো। সুলতান একটি কুশনে বসে ছিলেন- তাঁর সামনে ছিলো দুটি পানপাত্র-একটি সোনার ও একটি রূপার। তিনি বতুতার কাছে তাঁর দেশের ও ভ্রমণের কথা শুনতে চাইলেন। এরপর তিনি জিগ্যেস করলেন তাঁর সাক্ষাতের উদ্দেশ্য। বতুতা বললেন, ‘আপনি একজন ধর্মপরায়ন ও ন্যায়বান সুলতানের পুত্র। সামনের ওগুলো ছাড়া আপনার বিরুদ্ধে বলার কিছুই নেই।’ বলে তিনি তাঁর সামনের পানপাত্র দুটি দেখালেন। সুলতান খুবই বিব্রত বোধ করলেন এবং বললেন, ‘আপনার মতো লোকের সাক্ষাৎ পাওয়া আল্লাহর মেহেরবানী।’ বতুতা দেখলেন যে তিনি সংজ্ঞাহীন হয়ে প্রায় পড়ে যাচ্ছেন। একজন চিকিৎসক যিনি ওখানে উপস্থিত ছিলেন বতুতার পদচুম্বন করে বললেন, ‘খোদার আশীর্বাদ আপনার ওপরে বর্ষিত হোক, আপনি সুলতানকে যে কথাগুলো বললেন, আপনি ছাড়া আর কেউ তা পারতো না। আশা করি সুলতানের উপর এর ভালো প্রভাব পড়বে।’
পৃষ্ঠা:১০
অনেক ফলের বাগান, নদী এবং শোভাময় গ্রাম অতিক্রম করে বতুতা পৌছালেন ইস্পাহানে। ইস্পাহান তখন ছিলো ঐ এলাকার সর্ববৃহৎ ও সুন্দর নগরী। কিন্তু শিয়া সুন্নী দ্বন্দ্বে এ শহরটি তখন প্রায় ধ্বংসপ্রাপ্ত। বিরোধ তখনও চলছিলো। কিন্তু জায়গাটিতে জন্মাতো প্রচুর ফলফলারি, যেমন খুবানি, নাসপাতি, আঙুর ও তরমুজ। এখানকার লোকেরা ছিলেন খুব সুদর্শন, দুধে-আলতাগায়ের রং। তাঁরা ছিলো খুবই সাহসী, উদার ও অতিথি পরায়ণ। কে কাকে আপ্যায়ন করবে এ নিয়ে ছিল তাঁদের মধ্যে প্রবল প্রতিযোগিতা। কুফা এবং কারবালা হয়ে বতুতা এলেন বাগদাদ, শান্তির নীড় ও ইসলামের রাজধানী। শহরে ছিলো দুটি সেতু। পুরুষ ও নারী সবরকমের লোক দিনরাত্রি তা পারাপার করতো। সেখানে ছিলো অনেক মসজিদ ও মাদ্রাসা। অসংখ্য উৎকৃষ্ট স্নানাগারের জন্য বাগদাদ ছিলো সুপ্রসিদ্ধ। সেখানে ছিলো জলপাত্র, ঠাণ্ডা ও গরম পানি সরবরাহের ব্যবস্থা ও তোয়ালে। শহরের পূর্বাঞ্চলে ছিলো অনেক বাজার যার সর্ববৃহৎটিকে বলা হতো মঙ্গলবারের বাজার।
পৃষ্ঠা ১১ থেকে ২২
পৃষ্ঠা:১১
আরও বহু জায়গা ভ্রমণ করে বতুতা ফিরে এলেন মক্কাতে। সেখানে তিনি ছিলেন দু বছরের বেশি সময়, যার মধ্যে তিনি তিনবার হজ্জ পালন করলেন। বতুতা আবার পথে নামলেন। তিনি গেলেন জেদ্দা এবং তারপর এডেন যেটা ছিল ইয়েমেনের একটি নৌবন্দর। এর ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল ভারতের সঙ্গে। ক্যাম্বে এবং কালিকট থেকে অনেক বড় বড় জাহাজ এখানে এসে নোঙর করতো। অনেক ভারতীয় ও মিশরীয় সওদাগর এখানে বসবাস করতেন। এই নগরীর অধিবাসীরা ছিল ব্যবসায়ী, মুটেমজুর এবং জেলে। কিছু কিছু সওদাগর ছিলেন অত্যন্ত ধনী এবং বড় বড় জাহাজের মালিক। সম্পদ নিয়ে তাঁদের মধ্যে ছিলো প্রবল প্রতিযোগিতা। কিন্তু তা সত্ত্বেও তাঁরা ছিলেন খুব ধর্মভীরু, ন্যায়বান এবং উদার প্রকৃতির। অনেক দিন ধরে অনেক পথে আফ্রিকা ও এশিয়ার নানা দেশ ঘুরে বতুতা এলেন কনস্ট্যান্টিনোপলে। এটা ছিল খ্রিস্টানদের একটি পবিত্র নগরী। সম্রাট জানতে পারলেন যে, বতুতা একজন পণ্ডিত এবং খ্রিস্টানদের অনেক পবিত্র স্থান তিনি ভ্রমণ করেছেন। সেজন্য তিনি তাঁকে সসম্মানে অভ্যর্থনা করলেন। প্রাসাদের মূল কক্ষটি ছিলো চোখ- ধাঁধানো কারুকার্যময়। কক্ষটির মধ্যে একটি সামিয়ানার নিচে সম্রাট বসেছিলেন। তিনি
পৃষ্ঠা:১২
নানা খ্রিস্টান শহর সম্পর্কে বতুতার কাছ থেকে শুনলেন। তিনি বতুতার ওপরে খুবই খুশি হলেন এবং তাঁকে একটি মূল্যবান জোব্বা উপহার দিলেন, তৎসঙ্গে একটি ঘোড়া এবং রাজকীয় সম্মান ও সুরক্ষার প্রতীক হিসেবে একটি ছাতা। এক মাসের ওপর কনস্ট্যান্টিনোপলে বতুতা অতিবাহিত করলেন এবং এর নানা বাজার, মন্দির এবং ধর্মশালা ঘুরে দেখলেন। এরপর বতুতা উত্তরের পথে অগ্রসর হয়ে ভোলগা নদী পর্যন্ত পৌছালেন। প্রায় সকল অঞ্চলই ছিল অত্যন্ত শীত প্রধান। বতুতা প্রায়ই তিনটি উলের কোট, দুটি পাজামা, পুরু মোজা এবং ভল্লুকের চামড়ার আস্তর দেওয়া ঘোড়ার চামড়ার জুতা পরিধান করতেন। তিনি আগুনের মতো গরম পানি দিয়ে ওজু করতেন; কিন্তু নিমিষে সে পানি বরফ হয়ে তাঁর গোঁফ-দাড়িতেলেগে থাকতো আর ঝাঁকি দিলে সেগুলো বরফ কণার মতো ঝরে পড়তো।
পৃষ্ঠা:১৩
ভারত-ভ্রমণ: দুঃসাহসিক অভিযান এরপর বতুতাকে নিয়ে গেল বুখারা, সমরখন্দ এবং বালখে। কিন্তু সম্প্রতি নৃশংস মোঙ্গল আক্রমণকারী চেঙ্গিস খান এই শহরগুলিকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করে দিয়েছিলো। বতুতার চোখে পড়লো অসংখ্য মসজিদ, বিদ্যালয় ও বাজারের ধ্বংসাবশেষ। এরপর কাবুল হয়ে বতুতা ভারতে প্রবেশ করলেন ১৩৩৩ সনের সেপ্টেম্বর মাসে। পাঞ্জাবে পৌঁছে তিনি দিল্লীর সুলতানের অনুমতি চেয়ে খবর পাঠালেন। সেখান থেকে দিল্লীর দূরত্ব ছিল ৫০ দিনের পথ; কিন্তু সংবাদ পৌঁছাল মাত্র ৫ দিনে। বতুতা ঐ সময়ে ভারতের ডাক বিভাগের উন্নতিতে মুগ্ধ হয়েছিলেন।
পৃষ্ঠা:১৪
ডাকের পথের প্রতি তিন মাইল অন্তর অন্তর ছিল একটি চৌকি। ডাক হরকরারা এখানে তৈরি হয়েই থাকতো। তাদের সাড়ে চারফুট লম্বা লাঠির অগ্রভাগে ছিল তামার ঘণ্টি। যখন তারা ডাকের থলি নিয়ে দৌড়াতো, ঘণ্টি বাজতে থাকতো। খুব দ্রুতবেগে দৌড়ে হরকরারা পরের চৌকিতে পৌঁছাতো। সেখানে আর একজন হরকরা তার ডাকের থলি নিয়ে নিতো। এভাবে পারস্পরিক সহযোগিতায় চিঠি দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছে যেতো। সুলতানের অনুমতি লাভের পর বক্তৃতা দিল্লীর দিকে অগ্রসর হলেন। এক নলখাগড়ার জঙ্গলের মধ্য দিয়ে বিস্তৃত ছিল সেই পথ এবং এখানে জীবনে এই প্রথম বতুতা গণ্ডার দেখলেন। একটি মরু অঞ্চল এবং তারপর আরও অনেক অচেনা স্থান অতিক্রম করে তিনি দিল্লী পৌছালেন। দিল্লীর সুলতানের রাজসভা ছিল খুবই আড়ম্বরপূর্ণ। একের পর এক বেশ কয়েকটি দরজা ছিল প্রবেশের জন্য। সেখানে একের পর এক প্রহরীরা, সঙ্গীতজ্ঞ ও নকীবেরা
পৃষ্ঠা:১৫
অবস্থান করতেন। সৌধের মাঝখানে ছিলো বিশাল দরবার গৃহ। একটি চৌকির ওপর স্থাপিত মহামূল্যবান একটি সিংহাসনে সুলতান পা গুটিয়ে বসতেন। মন্ত্রী ও সচিবগণ পাশে দাঁড়াতেন। এই কক্ষে ঢুকতে একজন লোককে কয়েক দফা কুর্নিশ করতে হতো। এই সময়ে ভারতের শাসক ছিলেন সুলতান মুহাম্মদ বিন তুঘলক। তিনি এক অদ্ভুত চরিত্রের লোক ছিলেন। তাঁর কাছে কাউকে পুরষ্কৃত করা বা কারও রক্তপাত ঘটানো-এ দুয়ের মধ্যে কোনো তফাৎ ছিল না। তাঁর দরজায় অনেক গরীব রাজা হয়ে যেতো আর অনেক দুর্ভাগার গর্দান যেতো। তিনি ছিলেন অত্যন্ত দাম্ভিক; আবার কোনো কোনো সময়ে খুবই বিনয়ী। একসময় এক ব্যক্তি তাঁরই বিরুদ্ধে কাজির কাছে ফরিয়াদ জানালো। সুলতান নিরস্ত্র অবস্থায় পায়ে হেঁটে কাজির কাছে উপস্থিত হলেন এবং হুকুম করেছিলেন তিনি যখন ঢুকবেন তখন কাজি যেন উঠে না দাঁড়ায়। তিনি কাজির প্রদত্ত শাস্তি মাথা পেতে নিলেন। এক সময় দেশে এক দুর্ভিক্ষ দেখা দিলো। সুলতান বিপুল পরিমাণ খাদ্যশস্য লোকজনের মধ্যে বিনামূল্যে বিতরণ করলেন। তার দয়া ও ন্যায়পরায়নতা সত্ত্বেও তিনি ছিলেন ভীষণ হিংস্র প্রকৃতির। সামান্য দোষেও তিনি একজনকে গুরু দণ্ড দিতেন। বহু লোককে তিনি আটক করে নির্যাতন করে
পৃষ্ঠা:১৬
হত্যা করতেন। বৃত্তদেহগুলো বাজারে ভিন দিন রেখে দেওয়া হলো মানুষকে শিক্ষা সুলতানের একটি নৃশংস কাজ হলো দিল্লিব সভল লোককে দিল্লি থেকে দৌলতাবাদে যেতে বাধ্য করা। সুলতান জানতে পেরেছিলেন যে দিল্লির অনেক লোক তীয় দিছে তীর সমালোচনা করে। হাই তিনি হকুম করবেন, ডামের সবাইকে অন্য শহরে চলে যেতে হবে। শুধুমাত্র দুজন লোক তাঁর অমেশ তামিল করতে ব্যর্থ হলো। একজন পন্থ ও একজন অন্ধ। সুলতান বুজনকেই নৃশংসভাবে হত্যা করলেন সুলতানের নেক নজরে ছিলেন। তাকে দিল্লির কাজি হিসেবে গিযুক্ত করা যায় এবং ভালো বেতন ও অন্যান্য সুবিধাদি দেওয়া হয়। কিন্তু এখবায় বিলি সুলতানেষ অসন্তুটির কারণ হন এবং পাঙ্গিয় ওয়ে তীর হয়ে পড়েন। কিন্তু সুলতান শেষ পর্যন্ত তাকে ক্ষমা করেন এবং আগের চাইতেও বেশি সুবিধাদি প্রদান করেন।কিবি তাকে তাঁর রাষ্ট্রদূত মিসেরে চীন সম্রাটের নিকট প্রেরণ করেণ। কারণ তিনি জানতেন যে বস্তুমা রমজান বিয়াত প্রমাণায়ী এবং ভ্রমণ করতেই তিনি ভালোবাষেন।
পৃষ্ঠা:১৭
চীন পরিভ্রমণ: বতুতা চীনের উদ্দেশে রওনা হলেন ১৩৪২ সনের জুলাই মাসে। সুলতান তাঁর সঙ্গে চীনের সম্রাটের জন্য প্রেরণ করলেন ১০০টি ঘোড়া, ১০০ জন কৃতদাস, কিংখাবের কারুকার্যময় আলখেল্লা আর সোনা ও রূপার ঝাড়বাতি। কিন্তু যাত্রাটি ছিল দুর্ভাগ্যজনক। আলিগড়ের নিকটে তাঁরা স্থানীয় বিদ্রোহীদের সামনে পড়ে গেলেন। দলের অনেকেই মারা গেলেন। দল থেকে বিচ্যুত হয়ে বতুতা কয়েক দফা মৃত্যুর মুখোমুখি হলেন। প্রায়ই তাঁকে অনাহারে থাকতো হতো। একবার তিনি সারারাত্রি একটি বাগানে একটি বিশাল পাত্রের মধ্যে আত্মগোপন করেছিলেন। ঐ পাত্রের এককোণে একটি পাখি বসে ভীতভাবে ডানা ঝাপ্টাচ্ছিল। এভাবে দুটি প্রাণী এক সঙ্গে একটি ভয়ের রজনী পার করলো। বতুতা কনৌজ, গোয়ালিয়র ও উজ্জয়িনী পার হয়ে মালাবারে পৌঁছালেন। তাঁদের দল অবশেষে কালিকটে পুনর্মিলিত হলো এবং চীনের পথে যাত্রা করলো। কিন্তু শীঘ্রই আবহাওয়ার অবনতি ঘটল এবং কয়েকটি জাহাজ ডুবে গেলো। বতুতা কালিকটে ফিরে এলেন এবং কিছুদিনের জন্য একটি ধর্মযুদ্ধে যোগদান করলেন।
পৃষ্ঠা:১৮
এরপর বতুতা গেলেন মালদ্বীপে। এ ইপের অধিবাসীরা সাধারণত মাছ ও নারিকেল খেয়ে বাঁচতো। তার সবাই ছিল মুসলমান এবং খুব সন্তল ও ধর্মভীরু। সিবে তারা দুধার খোদল করর প্রচণ্ড গরমের কারণে। ডানের পরিধেয় ছিল খুবই সামামা এবং তারা খালিপায়ে হাঁটিও। তাদের মুদ্রা ছিল বড়ি। বড়ুজা দেখানে কিছুদিন কাজি হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন। কিন্তু বিছুদিন পরেই তিনি নতুন অভিজ্ঞতার হাতছানিয়ে পথে বের হলেন। তিনি বয় দিলেয় সমুদ্রযাত্রা শেষে সিংয়ল ষ্টীপে পৌছালেন। দেগানে মিনি সান্নান্দিন পাহাড়ে উঠে চূড়ায় আদদ আলায়হেসালামের পবিত্র পদচিহ্ন দেখবেন। এরপর তিনি নৌযাত্র্য করবেন করানগুলে। কিন্তু ঝড়ে জাহাজ বিধবস্ত হলো এবং বহু চেষ্টা করে বক্তৃতা বাঁয়ে পৌঁছলেন। এরপর অনেক ঘোরাঘুরির পর তিনি পৌছ্যালন বাংলাদেশে। বস্তুতা সেখদেন বংলা একটি সুবিস্তৃত দেশ সেখানে প্রখুব বাস জন্মায়। এখানে জিনিলপত্রের দাম ছিল পৃথিবীতে সর্বনিম্ন। অউটি মোটিভোজ্য দূরণি অথবা ১০টি কবুতর
পৃষ্ঠা:১৯
বিক্রি হতো মাত্র এক দিরহামে। একটি মোটা ভেড়া বিক্রি হতো দুই দিরহামে। ৩০ হাত মিহি সুতি কাপড় পাওয়া যেতো দুই দিনারে। বতুতা প্রথমে এলেন সমুদ্র উপকূলবর্তী বড় শহর চট্টগ্রামে, যার অদূরে এক জায়গায় গঙ্গা ও যমুনা একত্র হয়ে সমুদ্রে পড়েছে। ঐ সময়ে বাংলার সুলতান ছিলেন ফখরুদ্দিন। তিনি ছিলেন একজন সুশাসক। নদীতে ছিল তাঁর এক বিশাল নৌবহর। তিনি এবং লক্ষ্মণাবতীর সুলতান ছিলেন পরস্পরের প্রতিদ্বন্দ্বী। বর্ষাকালে সুলতান ফখরুদ্দীন লক্ষ্মণাবতী আক্রমণ করতেন তাঁর নৌবহর নিয়ে আর শুকনো মৌসুমে লক্ষ্মণাবতীর সুলতান পাল্টা আক্রমণ করতেন তাঁর স্থলবাহিনী নিয়ে। বতুতা পরে পৌঁছালেন সোনারগাঁও-এ। ঠিক ঐ সময়ে একটি জাহাজ রওনা হচ্ছিল সুমাত্রার দিকে এবং বতুতা তাতে উঠে পড়লেন। সুমাত্রাতে কিছুদিন কাটিয়ে তিনি এলেন তাওয়ালিসিতে, তারপর চীনে। চীন ছিলো একটি বিশাল দেশ বিভিন্ন রকম ফল, খাদ্যশস্য, সোনা ও রূপায় সমৃদ্ধ। লোকেরা একরকম মাটি থেকে চীনা মাটি তৈরি করতো এবং তা দিয়ে অতি সুন্দর সুন্দর
পৃষ্ঠা:২০
বাসনপত্র তৈরি করতো। তারা ছিল দক্ষ শিল্পী এবং নির্ভুলভাবে একজনের প্রতিকৃতি এঁকে দিতে পারতো। চীনারা সোনা, রূপা বা তামার কোনো মুদ্রা ব্যবহার করতো না-ব্যবহার করতো কাগজের মুদ্রা। কাগজের নোটগুলি ছিল হাতের তালুর মতো প্রশস্ত। তার ওপরে থাকতো সম্রাটের সিলমোহরের ছাপ। যখন এই নোটগুলো মলিন বা ছিন্ন হয়ে যেতো, তখন এগুলোকে বিনামূল্যে বদলে দেওয়া হতো।বতুতা দেখলেন তখন চীনদেশ ছিলো এক রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে। অনেক দিন অপেক্ষার পর তিনি সম্রাটের কাছ থেকে সংবাদ পেলেন এবং আবার ভারতের উদ্দেশে একটি জাহাজে রওনা হলেন। দশ দিনের মধ্যে হঠাৎ আবহাওয়ার পরিবর্তন ঘটলো। আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হয়ে প্রবল বৃষ্টিপাত শুরু হলো। বতুতার জাহাজটি ঝড়ে অচেনা এক জায়গায় উপনীত হলো।
পৃষ্ঠা:২১
সেখানে জাহাজটি একটি অদ্ভুত বাস্তব মুখোমুখি হলো। এটা দেদয়ে ছিল ঠিক এভরী পাহাড়ের মতো। কিন্তু জাহাজটি যখন কাছাকাছি এলো তখন মনে হলো এটা সেই রুখ পাখি যা একসময় সিন্দাবাদের জাহাজ আকাশে উড়িয়ে নিয়ে গিয়েছিলো। নাবিকেরা এতো ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়লো যে তারা তাদের নিরাপওার জন্য আল্লাহর কাছে মোনাযাত শুরু করলে। সৌভাগ্যক্রমে বাতাসের গতি পরিবর্তিত হলো এবং জাহাজ তার সঠিক পথে ফিরে এলো ।বতুতা সুমাএা এবং আরো অনেক যায়গা পার হয়ে ভারতের কারিকট বন্দরে ফিরে এলেন। তিনি মুলতানের সঙ্গে দেখা করতে চাইসেন। কিন্তু মন পরিবর্তন করে তিনি মক্কা ঢলে খোলন এবং যেখানে তারার হচ্ছ করলেন। ডিনি কায়রো এবং ডিউদিশ অতিক্রম করে অবশেবে তাঁর নিজ শহর জানভিয়াবে পৌঁছালেন ১৩৯৯ নানর মাঝামাঝি সময়ে।
পৃষ্ঠা:২২
প্রয় পানার বছর আগে হায় পিতা লোকান্তরিত হয়েছিলেন এবং তাঁর মাতাও আর বেচে ছিলেন না। তিনি তাদের কবর জিয়ারত করতেন বখানেই কিন্তু ইবনে বতুতার প্রয়োহসিক অভিয়ালের শেষ নয়। তিনি একার্থী বর্মযুদ্ধে যোগদান করে স্পেনে দিয়েছিলেন। এরগন্ধ আরও অনেক বিগজনাত এবং লোমহর্ষক অভিযানে অংশগ্রহণের পর তাঁর দ্বিখন নাটকের সহলিবং নেমে আগে।