Skip to content

আমাদের দেশে একটি শিশু জন্ম নিলে শিশুদের কিছু রোগ নিয়ে বাবা মায়েরা আতঙ্কে থাকেন। এর মধ্যে নিউমোনিয়া একটি। বাংলাদেশে প্রতি বছর বিপুল সংখ্যক শিশু নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয় এবং এদের মধ্যে অনেক শিশুর মৃত্যু হয়। এছাড়াও নিউমোনিয়া পরবর্তী নানা জটিলতার দীর্ঘমেয়াদী সমস্যাতেও শিশুরা ভোগে।  শিশু যেন নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত না হয় সেজন্য আগে থেকেই সচেতন হতে হবে। আক্রান্ত হলে সঠিক সময়ে চিকিৎসা করতে হবে। কিন্তু কীভাবে বুঝবেন আপনার সন্তান নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত কিনা? আজকের আর্টিকেলে জানাবো শিশুদের নিউমোনিয়া হওয়ার কারণ, লক্ষণ, প্রতিরোধ ও চিকিৎসা সম্পর্কে।

নিউমোনিয়া কী?

নিউমোনিয়া মূলত ফুসফুসের প্রদাহজনিত একটি সমস্যা। এর ফলে ফুসফুস ও শ্বাসযন্ত্র আক্রান্ত হয়। ইংরেজিতে একে বলে রেসপিরেটরি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন (Respiratory tract infection)। নিউমোনিয়া হলে শিশুর স্বাভাবিক শ্বাস প্রক্রিয়া ব্যাহত হয় এবং নানা শারীরিক জটিলতা দেখা দেয়। সঠিক সময়ে চিকিৎসার অভাবে শিশুর মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। বর্ষাকাল ও শীতকালে এই রোগের প্রকোপ বেশি দেখা যায়।

কী কী কারণে শিশুরা এ রোগে আক্রান্ত হয়?

শিশুদের ক্ষেত্রে নিউমোনিয়া রোগটির সংক্রমণ মূলত বিভিন্ন ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া বা ছত্রাকজনিত কারণে হয়ে থাকে। যে সব ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাস থেকে নিউমোনিয়া রোগটির সংক্রমণ ঘটে-

  • স্ট্রেপ্টোকক্কাস নিউমোনি
  • গ্রুপ বি স্ট্রেপ্টোকক্কাস
  • স্ট্যাফাইলোকক্কাস অরিয়াস
  • প্যারা ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস
  • ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস
  • অ্যাডেনোভাইরাস

কোন ধরনের শিশুদের নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি?

  • শিশু চরম অপুষ্টির শিকার হলে
  • সংক্রামক রোগ যেমন- হাম, হুপিং কাশিতে আক্রান্ত শিশু
  • যেসব শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম
  • জন্মগতভাবে হৃদযন্ত্র বা ফুসফুসের রোগে আক্রান্ত শিশু
  • সদ্যোজাত শিশু

নিউমোনিয়ার লক্ষণ 

শিশু নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত কিনা তা কয়েকটি লক্ষণের মাধ্যমে প্রকাশ পায়। লক্ষণগুলো হচ্ছে-

১) অন্যান্য রোগগুলোর মতো নিউমোনিয়াতেও প্রথমে সাধারণত জ্বর দেখা যায়। সেই সাথে ঘাম, ঠান্ডা ও অস্বস্তি হতে পারে।

২) শিশুর খাবার ইচ্ছা কমে যাবে এবং স্বাভাবিকের চেয়ে কম উদ্যমী মনে হতে পারে অর্থাৎ হাত পা কম নড়াচড়া করবে।

৩) শিশু ও ছোট বাচ্চাদের ফ্যাকাশে দেখা যায়। এছাড়াও স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি কান্না করতে পারে।

৪) কাশি হতে পারে এবং এই কাশির সাথে শ্লেষ্মা বা মিউকাস তৈরি হয়।

৫) ঘন ঘন বমি বা ডায়রিয়াও হতে পারে।

৬) শিশু গুরুতর অসুস্থ হলে খাবার খাওয়া এবং পানি পান করার সময় প্রচন্ড অনীহা ভাব দেখায়। এর পাশাপাশি অচেতন ভাব, হাইপো থারমিয়া (এ সমস্যায় শরীরের তাপমাত্রা ৯৫ ডিগ্রি ফারেনহাইটের নিচে নেমে আসে) এবং খিঁচুনি থাকতে পারে।

৭) শরীরে অক্সিজেন খুব বেশি কমে গেলে শিশু মাথা ঝাঁকাবে এবং তীব্র অবস্থায় ঘড়ঘড় আওয়াজ করতে থাকবে। অক্সিজেনের অভাবে শিশুর শরীর নীল হয়ে যেতে পারে।

৮) পাঁজরের নিচের অংশ ভেতরের দিকে চেপে যাবে এবং হৃৎপিণ্ডের গতি বেড়ে যাবে। এছাড়া স্টেথোস্কোপ দিয়ে পরীক্ষা করলে আরও লক্ষণ পাওয়া যাবে।

কীভাবে নির্ণয় করা যায় এই রোগ?

একজন সুস্থ বাচ্চার ক্ষেত্রে শ্বাস প্রশ্বাস নেওয়ার সময় বুক প্রসারিত হতে থাকে। কিন্তু অসুস্থ বাচ্চার ক্ষেত্রে শ্বাস প্রশ্বাসের সময় বুক প্রসারিত হওয়ার জায়গায় সংকুচিত হয়ে থাকে অর্থাৎ বুক নিচের দিকে চেপে যায়। এছাড়াও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত বাচ্চাদের শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক বাচ্চাদের তুলনায় দ্রুত হয়। ভাইরাল সংক্রমণে শ্বাসকষ্ট বেশি হয়ে থাকে।

নিউমোনিয়া হলে কোন বয়সী শিশু কতবার শ্বাস নিতে পারে?

শিশুর বয়স-

  • ০-২ মাস হলে প্রতি মিনিটে ৬০ বারের বেশি শ্বাস নিবে
  • ২-১২ মাস হলে মিনিটে ৫০ বারের বেশি শ্বাস নিবে
  • ১-৫ বছর হলে মিনিটে ৪০ বারের বেশি শ্বাস নিবে

এভাবেই নিউমোনিয়া নির্ণয় করা হয়। এছাড়া ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সংক্রমিত নিউমোনিয়া পরীক্ষা করার জন্য এক্স-রে, রক্ত ​​এবং অন্যান্য পরীক্ষা করতে হবে।

যেভাবে প্রতিরোধ করা যায় 

শিশুদের নিউমোনিয়া প্রতিরোধ করাকেই শিশুমৃত্যু কমানোর একমাত্র উপায় হিসেবে বিবেচনা করা হয়। প্রতিরোধের জন্য যে বিষয়গুলো মেনে চলতে হবে-

১) এইচ আই ভি, নিউমোকক্কাস, হাম ও হুপিং কাশির টিকা দেওয়া নিউমোনিয়া প্রতিরোধের সবচেয়ে কার্যকর উপায়। এক বছরের মধ্যে সময়মতো শিশুর সব টিকা, বিশেষ করে নিউমোনিয়ার টিকা দিতে হবে।

২) ছয় মাসের কম বয়সী শিশু যদি টানা ৬ মাস বুকের দুধ পান করে তবে নিউমোনিয়ার জীবাণু অনেকটাই প্রতিহত করতে পারবে। ছয় মাসের বেশি হলে বুকের দুধের পাশাপাশি বাড়তি খাবার হিসেবে ঘরে তৈরি খাবার খাওয়াতে পারলে ভালো। বুকের দুধ নিউমোনিয়া প্রতিরোধে কার্যকরী হওয়ার পাশাপাশি শিশুর অসুস্থতার মাত্রা কমাতেও সাহায্য করে।

৩) বায়ু দূষণের মতো পরিবেশগত কারণগুলো মোকাবেলা করতে পারলে এ রোগের সম্ভাবনা অনেকটাই কমে যায়। যেমন- ধোঁয়া হয় না এমন উন্নত ঘরোয়া চুলা ব্যবহার করা, কোলাহলপূর্ণ জায়গায় ভালোভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ইত্যাদি।

৪) এইচ আই ভি সংক্রমিত শিশুদের মাঝে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। এই ধরনের শিশুদের ক্ষেত্রে নিউমোনিয়া সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি কমাতে প্রতিদিন অ্যান্টিবায়োটিক কোট্রিমক্সাজল দেওয়া উচিত।

৫) শিশুকে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত অন্য কোনো শিশু অথবা হাঁচি-কাশি আক্রান্ত লোকের কাছ থেকে দূরে রাখতে হবে। শিশু যেন ধুলাবালির সংস্পর্শে না আসে সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।

৬) শিশুকে কোলে নেওয়ার আগে বার বার হাত ধুতে হবে। শিশুর সামনে ধূমপান করা যাবে না।

চিকিৎসা

১) নিউমোনিয়া যদি ব্যাকটেরিয়া থেকে হয়, তাহলে শিশুকে সুস্থ করার জন্য শিরায় অথবা মুখের অ্যান্টিবায়োটিক দিতে হবে। শিশু যদি ভালোভাবে তরল পান করতে না পারে তখন শিরায় অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হয়।

২) অক্সিজেন থেরাপি দিতে হবে।

বড়দের তুলনায় শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে। তাই শিশুর যত্ন নেওয়ার সময় সতর্কও থাকতে হয় বেশি। গরম ও ঠান্ডা দুই সময়েই খেয়াল রাখতে হবে শিশুর যেন অতিরিক্ত ঠান্ডা বা গরম না লাগে। সচেতন থাকলে শিশুর নিউমোনিয়া হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই কমিয়ে আনা সম্ভব।

গর্ভাবস্থা একজন নারীর জীবনের সবচেয়ে সুন্দর ও গুরুত্বপূর্ণ একটি সময়। এই সময় প্রতিটা মেয়েই তার অনাগত সন্তানকে নিয়ে কতই না স্বপ্ন দেখে! কিন্তু এই গর্ভাবস্থায় নানা ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। এই সময়ে শরীরে হরমোনের মাত্রা স্বাভাবিক অবস্থা থেকে বাড়ে অথবা কমে, এটা খুবই স্বাভাবিক। কিন্তু হরমোন লেভেল নরমাল রেঞ্জে না থাকলে বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যা হতে পারে। প্রেগনেন্সিতে থাইরয়েডের সমস্যা বেশ কমন, এই হরমোনের মাত্রা ঠিক না থাকলে গর্ভের শিশুর বিকাশ বাধাগ্রস্থ হয়। এমনকি হতে পারে অকাল জন্ম, গর্ভপাত অথবা মৃতপ্রসব। প্রেগনেন্সিতে থাইরয়েডের সমস্যা নিয়ে আজকের ফিচার।

থাইরয়েড কী?

প্রেগনেন্সিতে থাইরয়েডের সমস্যা কেন হয় বা এর প্রতিকার কী, এসব কিছু জানার আগে আমাদের জেনে নিতে হবে থাইরয়েড জিনিসটা আসলে কী! থাইরয়েড ক্ষুদ্র ও প্রজাপতি আকৃতির একটি গ্রন্থি যা গলার দুইদিকে অবস্থিত। এই গ্রন্থি উৎপাদন করে থাইরয়েড হরমোন এবং এই হরমোন শরীরের বৃদ্ধি, বিকাশ ও অন্যান্য কাজে সহায়তা করে থাকে। এটি হৃদস্পন্দনকে প্রভাবিত করতে পারে, এছাড়াও বিপাক প্রক্রিয়াতেও এর প্রভাব আছে।

কখনও কখনও এই থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে হরমোন খুব বেশি অথবা খুব কম পরিমাণে নিঃসৃত হয়ে থাকে, আর তখনই ঘটে যায় বিপত্তি। কিছু কিছু ক্ষেত্রে একজন মহিলার থাইরয়েডের সমস্যা গর্ভাবস্থার আগে থেকেই থাকতে পারে। অনেকের ক্ষেত্রে, গর্ভাবস্থায় বা সন্তান জন্ম দেওয়ার পরেই প্রথমবারের মতো থাইরয়েডের সমস্যা হয়। তবে এ নিয়ে ঘাবড়ানোর কিছু নেই। চিকিৎসা নিলে গর্ভাবস্থায় থাইরয়েড বাড়লে বা কমলেও কোনো সমস্যা হয় না। তবে হরমোনের মাত্রা যেন স্বাভাবিক রেঞ্জে থাকে, সেটা মনিটর করতে হবে।

প্রেগনেন্সিতে থাইরয়েডের সমস্যা 

কাদের ক্ষেত্রে প্রেগনেন্সিতে থাইরয়েডের ঝুঁকি বেশি থাকে, জেনে নিন তাহলে-

১. গর্ভবতী হওয়ার আগে থেকেই যেসব মহিলারা হাইপোথাইরয়েডিজম বা হাইপারথাইরয়েডিজমের জন্য চিকিৎসা নিয়েছেন সেসব মহিলারা এক্ষেত্রে ঝুঁকিতে থাকে।

২. পূর্বের প্রেগনেন্সিতে থাইরয়েড প্রবলেম ছিল, এই অবস্থায় সন্তানের জন্ম দিয়েছেন এমন মা-ও ঝুঁকিতে থাকে।

৩. হাইপোথাইরয়েডিজম বা হাইপারথাইরয়েডিজমের ফ্যামিলি হিস্ট্রি থাকলেও ঝুঁকি বেড়ে যায়।

হাইপারথাইরয়েডিজম 

থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে থাইরয়েড হরমোন নিঃসরণের পরিমাণ বেড়ে গেলে যে অবস্থার সৃষ্টি হয় তাকে হাইপারথাইরয়েডিজম বলা হয়ে থাকে। প্রেগনেন্সিতে হাইপারথাইরয়েডিজমের লক্ষণগুলো কী কী সেটা দেখে নিন তাহলে-

  • অনিয়মিত হৃদস্পন্দন
  • মারাত্মক বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া
  • অতিরিক্ত ঘাম হওয়া
  • মেজাজ খিটখিটে থাকা
  • হালকা কাঁপুনি
  • ঘুমের সমস্যা
  • সাধারণ গর্ভাবস্থায় যে ওজন থাকা উচিত তারচেয়ে ওজন হ্রাস পাওয়া বা কম ওজন থাকা

হাইপোথাইরয়েডিজম

থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে থাইরয়েড হরমোন নিঃসরণের পরিমাণ কমে গেলে যে অবস্থার সৃষ্টি হয় তাকে হাইপোথাইরয়েডিজম বলা হয়ে থাকে। হাইপোথাইরয়েডিজমের লক্ষণগুলো কী কী সেটা দেখে নিন তাহলে-

  • অতিরিক্ত দুর্বলতা বা ক্লান্ত লাগা
  • স্বাভাবিকের থেকে ওজন বৃদ্ধি পাওয়া
  • কোষ্ঠকাঠিন্য
  • কোনো কাজে মনোযোগ দিতে অসুবিধা হওয়া
  • প্রায়ই ভুলে যাওয়া
  • শারীরিক মিলনে অনীহা
  • ক্ষুধা কমে যাওয়া

প্রেগনেন্সিতে থাইরয়েডের সমস্যা হলে করণীয়

এই ধরনের লক্ষণ যদি আপনারও থাকে, তাহলে দ্রুত একজন অভিজ্ঞ এন্ড্রোক্রাইনোলজিস্টের সাথে কথা বলুন। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী টেস্ট করিয়ে নিশ্চিত হোন আপনার থাইরয়েড লেভেল ঠিক আছে কিনা। রক্তে TSH, T3 ও T4 এর পরিমাণ থেকেই বোঝা যাবে এটা।

হাইপারথাইরয়েডিজমের ক্ষেত্রে

যেসব মায়েরা গর্ভকালীন অবস্থায় হাইপারথাইরয়েডিজমের সমস্যার ভুগছেন, তাদের জন্য অ্যান্টিথাইরয়েড ওষুধ ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এই অ্যান্টিথাইরয়েড ড্রাগ থাইরয়েড হরমোন উৎপাদন কন্ট্রোল করে। প্রেগনেন্সিতে ডাক্তারের পরামর্শে মেডিসিন নিতে হবে। ডোজ কেমন হবে, কতদিন মেডিসিন কন্টিনিউ করতে হবে, সবই আপনাকে ডাক্তার জানিয়ে দিবেন। প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী মেডিসিন নিলে অবশ্যই থাইরয়েড কন্ট্রোলে আসবে।

হাইপোথাইরয়েডিজমের ক্ষেত্রে

হাইপোথাইরয়েডিজমের ক্ষেত্রে লিভোথাইরক্সিন নামে হরমোন দিয়ে চিকিৎসা করা হয়ে থাকে। অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শমতো ডোজ গ্রহণ করতে হবে। যেহেতু গর্ভকালীন অবস্থায় ভিটামিন, আয়রন ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট শরীরে থাইরয়েড হরমোনের নিঃসরণকে বাধা দিতে পারে, তাই লিভোথাইরক্সিন গ্রহণের ৩-৪ ঘন্টার মধ্যে এই ধরনের ট্যাবলেট খাওয়া উচিত না।

হাইপো বা হাইপার, দুই ধরনের ভারসাম্যহীনতাই মেডিসিনের মাধ্যমে ব্যালেন্স করা যায়। প্রেগনেন্সিতে থাইরয়েডের সমস্যা হলে দ্রুত ট্রিটমেন্ট নিন, ৩ মাস পর পর ব্লাড টেস্ট করিয়ে থাইরয়েড লেভেল চেক করুন। ভয়ের কিছু নেই, তবে সচেতনতা জরুরি। থাইরয়েড গ্ল্যান্ড ভালো রাখতে প্রোটিন জাতীয় খাবার বেশি করে খেতে হবে। রান্নাতে আয়োডিনযুক্ত লবণ ব্যবহার করতে হবে। অতিরিক্ত সয়াসস, প্রসেসড ফুড এগুলো এড়িয়ে চলবেন। 

ভালো থাকুন, নিরাপদে থাকুন।

সারাদিন কর্মব্যস্ত থাকার পর দিন শেষে রাতে আমাদের ঘুমাতে হয়। কারণ এই সময়েই আমাদের শরীরের প্রত্যেকটা অঙ্গ প্রত্যঙ্গ বিশ্রাম পায়। প্রত্যেক পূর্ণবয়স্ক মানুষের রাতে অন্তত ৬-৭ ঘন্টা ঘুমাতে হবে। আর এই ঘুম যদি ঠিকভাবে না হয় তখন শরীর অসুস্থ, ক্লান্তি, মেজাজ খিটখিটে, কাজে অমনযোগ সব ক্ষেত্রেই সমস্যার সৃষ্টি হয়। ঘুম ভালো না হলে শরীর এবং মন কোনোটাই ভালো থাকে না। প্রেগনেন্সিতে যদি ঘুমের সমস্যা হয়, তাহলে মা ও বাচ্চার উভয়েরই ক্ষতির সম্ভাবনা আছে। এ সময় হবু মায়েদের মধ্যে অনাগত শিশুর আগমন নিয়ে অতিরিক্ত উত্তেজনা কাজ করে। দুশ্চিন্তাও করেন অনেকেই। এ সমস্ত কারণেও ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে। গর্ভাবস্থায় ঘুমানোর সঠিক পজিশন অর্থাৎ কোন পজিশনে শোওয়া মা ও বাচ্চার জন্য ভালো সেই বিষয়ে আজকের ফিচার।

প্রেগনেন্সিতে ঘুম না হওয়ার কারণ

  • গর্ভাবস্থায় ক্রমাগত হরমোনাল চেঞ্জ এর কারণে ঘুমের ব্যাঘাত হয়
  • লেগ ক্র্যাম্পস বা পায়ে অস্বস্তিকর ব্যথার জন্য ঘুমের সমস্যা হতে পারে
  • ঘন ঘন প্রস্রাবের বেগ আসার ফলে ঘুমের প্রবলেম হয়
  • বমি বমি ভাব হওয়া বা ঘন ঘন বমি হওয়া
  • ব্যাক পেইনের জন্য ঘুম ভালো হয় না
  • গর্ভাবস্থার শেষের দিকে ব্রেস্ট পেইন হয়ে থাকে, কারণ এ সময় ব্রেস্ট স্ফীত হতে থাকে
  • বারবার ক্ষুধা লাগে
  • বুক জ্বালাপোড়া করা বা অ্যাসিডিটির সমস্যা

গর্ভাবস্থায় ঘুমানোর সঠিক পজিশন

১) গর্ভাবস্থায় চিৎ হয়ে শোওয়া উচিৎ নয়। চিৎ হয়ে শুলে শরীরের সবচেয়ে বড় শিরা ইনফেরিওর ভেনাকাভাতে চাপ পড়ে ও হৃদপিণ্ডে কম রক্ত প্রবেশ করে। ফলশ্রুতিতে হৃদপিন্ড থেকে কম রক্ত বের হয়। তখন মায়ের রক্ত চাপ কমে যায় এবং প্ল্যাসেন্টাতে রক্তপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়। এতে গর্ভের শিশুর শরীরে অক্সিজেন এর ঘাটতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

২) অ্যাজমা ও স্লিপ অ্যাপনিয়া আছে এমন মায়েদের নিজের শরীর ও শিশুকে পর্যাপ্ত পরিমাণ অক্সিজেন সরবরাহ করতে সমস্যা হয়। যাদের এসব সমস্যা আছে তারা চিৎ হয়ে শুলে রক্তপ্রবাহ কমে যাওয়ার সমস্যা যোগ হবে। তখন উভয় সমস্যা পরস্পরকে আরও খারাপ অবস্থায় নিয়ে যায়।

৩) ডান পাশ বা বাম পাশ হয়ে ঘুমানো যায়। এতে কোনো মানা নেই। যেভাবে গর্ভবতী আরাম অনুভব করেন, সেভাবেই ডান বা বাম পাশ হয়ে ঘুমাতে পারেন।

৪) বাম পাশ হয়ে ঘুমানোর কথা বেশি বলা হয়ে থাকে। কারণ এভাবে শোওয়াতে লিভার অতিরিক্ত ওজন বিশিষ্ট শরীরের চাপ থেকে সুরক্ষিত থাকবে।

৫) বাম কাত হয়ে শুলে রক্তসঞ্চালন সহজতর হয়। গর্ভের শিশুর রক্ত সরবরাহ মায়ের হার্ট থেকে সহজতর হয়।

৬) গর্ভাবস্থায় একদমই উপুর হয়ে শোওয়া উচিত নয়। উপুর হয়ে শুলে পাকস্থলি ও প্রসারিত জরায়ুর উপর চাপ সৃষ্টি করে। খাবার হজমেও সমস্যা হয়।

৭) উপুর হয়ে শুলে বাচ্চার নড়াচড়াতে ব্যাঘাত ঘটে এবং মায়ের শ্বাস-প্রশ্বাসে সমস্যা হয়।

গর্ভকালীন সময়ে ভালো ঘুমের জন্য কিছু টিপস

সাধারণত বলা হয় গর্ভকালীন সময়ে মাকে ৮-১০ ঘন্টা ঘুম এবং বিশ্রাম নিতে হবে, যা দিনে ২ ঘন্টা এবং রাতে ৮ ঘন্টা এভাবে ভাগ করে নেওয়া যায়। গর্ভবতী মায়ের ঘুমের স্থান হতে হবে কোলাহলমুক্ত, আরামদায়ক, কম আলো কিন্তু ভালো বাতাস চলাচল করে এমন স্থান। এই সময়ে ভালো ঘুমের জন্য আরও কিছু পরামর্শ থাকছে আপনাদের জন্য-

  • গর্ভবতী মায়ের সবসময় ঢিলেঢালা নরম আরামদায়ক পোশাক পরিধান করা উচিত
  • খাবারের সাথে সাথে ঘুমানো ঠিক না
  • ঘুমানোর আগে চা-কফি বা ক্যাফেইন জাতীয় খাবার খাওয়া যাবে না
  • ঘুমের অন্তত এক ঘন্টা আগে এক গ্লাস দুধ খাওয়া ভালো
  • প্রতিদিন ৩০ মিনিট হালকা ব্যায়াম সঠিক সময়ে ঘুমাতে সাহায্য করবে (ভারি ব্যায়াম করা যাবে না)
  • ঘুমাতে যাওয়ার অন্তত এক ঘন্টা আগে ডিভাইস থেকে নিজেকে দূরে রাখুন
  • আরামদায়ক বালিশ ব্যবহার করতে হবে
  • পায়ের নিচে ও পিঠের নিচে বালিশ দিলে পা ও কোমড়ের ব্যথা থেকে আরাম পাওয়া যায়

একজন নারী যখন জানতে পারেন তিনি সন্তান সম্ভবা, ঠিক তখন থেকেই তার পুরো দুনিয়াটা যেন বদলে যায়! পুরোটা প্রেগনেন্সি জুড়েই অনাগত শিশুর যত্ন ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়েই তার সময় চলে যায়। অনেক হবু মা-ই এসময়ে নিজের যত্ন নিতে ভুলে যান। কিন্তু এ সময় গর্ভের শিশুর পাশাপাশি মায়েরও প্রয়োজন সঠিক পরিচর্যা। এতে কিন্তু মনও ভালো থাকে। সেইজন্যে হবু মায়ের ত্বকের যত্নে কী কী করা যেতে পারে আর কোন ইনগ্রেডিয়েন্টগুলো এই সময়ে এড়িয়ে চলা উচিত, এটা নিয়ে আজকের ফিচার।

প্রেগনেন্সিতে ত্বকের পরিবর্তন 

প্রেগনেন্সি রিলেটেড স্কিনের সমস্যা অনেকেরই হয়ে থাকে। এর জন্য মূলত হরমোনের পরিবর্তনকেই দায়ী করা যায় অথবা একে মাতৃত্বকালীন স্বাভাবিক শারীরিক পরিবর্তন হিসেবেও ধরা যায়। কিছু কিছু মায়েদের পুরো প্রেগনেন্সিতে ত্বকের কোনো সমস্যাই হয় না, স্বাভাবিকই থাকে সবকিছু। কিন্তু বাকিদের বেলায় বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বিভিন্ন রকম ত্বকের সমস্যা দেখা দেয়।

সবথেকে কমন কিছু পরিবর্তন হলো-

১) ত্বক শুষ্ক ও খসখসে লাগে এবং ব্রণের সমস্যা বেড়ে যায়। চোখের নিচেও ডার্ক সার্কেল পড়তে পারে।

২) স্কিন ডার্ক বা কালচে হয়ে যাওয়া এই সময়ে বেশ কমন। বিশেষ করে গলা, ঘাড়, আন্ডারআর্মস ইত্যাদি স্থানে চাপ চাপ কালচে ময়লার মতো দাগ বেশি দেখা দেয়। একে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় মেলাজমা (Melasma) বলা হয়।

৩) কারো যদি প্রেগনেন্সির আগে থেকেই স্কিনের সমস্যা থেকে থাকে যেমন একজিমা, সোরিয়াসিস ইত্যাদি এ সময়ে সেটা পরিবর্তিত হয়। কারও ক্ষেত্রে ভালো হয়, কারও ক্ষেত্রে অবস্থার অবনতি হয়।

৪) এছাড়াও স্ট্রেচ মার্কস, স্পাইডার ভেইন, ফাঙ্গাল ইনফেকশন, ইচিনেস এই ধরনের সমস্যাও দেখা দেয়।

হবু মায়ের ত্বকের যত্নে যা যা এড়িয়ে চলতে হবে

ত্বকের যত্নে অনেক রকম প্রসাধনীই আমরা ব্যবহার করে থাকি। কিছু প্রসাধনীতে এমন অনেক কেমিক্যাল আছে যা গর্ভাবস্থায় ব্যবহার করলে তা গর্ভস্থ ভ্রূণের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে। যেমন-

১) রেটিনয়েডস বা ভিটামিন এ

স্কিনটোন ব্রাইট করতে, রিংকেলস দূর করতে, কালো দাগ দূর করা সহ আরও নানা রকম কার্যকরী গুণাবলির জন্য ভিটামিন এ ব্যবহার করা হয়। কিন্তু এই ভিটামিন এ ত্বকে শোষিত হয়ে রেটিনয়েডস-এ পরিনত হয়। অতিরিক্ত রেটিনয়েডস ভ্রণের বিভিন্ন রকম জন্মগত ত্রুটি, প্রিম্যাচিউর ডেলিভারি এমনকি মিসক্যারেজ পর্যন্ত ঘটাতে পারে। তাই ভিটামিন এ বেশি পরিমাণে আছে, এমন প্রসাধনী গর্ভাবস্থায় ব্যবহার করা যাবে না। এমনকি কেউ যদি মুখে ভিটামিন এ সেবন করে থাকেন, তাহলেও গর্ভধারণের অন্তত একমাস আগে তা বন্ধ করতে হবে।

২) স্যালিসাইলিক অ্যাসিড

ব্রণের চিকিৎসায় খুবই কার্যকরী একটি উপাদান স্যালিসাইলিক অ্যাসিড। কিন্তু গর্ভাবস্থায় হাই ডোজের বা হাই কনসেন্ট্রেশনের স্যালিসাইলিক অ্যাসিড ক্ষতিকর। এর কার্যকারিতা অনেকটা অ্যাসপিরিন এর মতো। গর্ভাবস্থায় শুরুর দিকে হাই ডোজে অ্যাসপিরিন বা স্যালিসাইলিক এসিড গ্রহণের ফলে ভ্রুণের জন্মগত ত্রুটি দেখা দিতে পারে। এমনকি পুরো প্রেগনেন্সি জুড়ে অতিমাত্রায় ব্যবহারের ফলে প্রিম্যাচিউর শিশুর জন্ম এবং শিশুর ব্রেইনে রক্তক্ষরণের প্রবণতাও দেখা দেয়।

৩) কেমিক্যাল সানস্ক্রিন

কেমিক্যাল সানস্ক্রিনে আল্ট্রাভায়োলেট ফিল্টার হিসেবে অক্সিবেনজোন এবং এর থেকে উৎপন্ন মৌলসমূহ খুব ফ্রিকোয়েন্টলি ব্যবহার করা হয়। এটি সান প্রোটেকশনের জন্য খুবই ইফেক্টিভ। কিন্তু এই কেমিক্যাল অ্যান্ড্রোক্রাইন হরমোন এর ভাঙ্গন ধরায়, যাতে মা ও শিশুর শরীরের পার্মানেন্ট ড্যামেজ হতে পারে। তাই প্রেগনেন্সিতে এ ধরনের প্রোডাক্ট ব্যবহার করতে নিষেধ করা হয়েছে। তবে মিনারেল বেইজড সানস্ক্রিন ইউজ করতে পারবেন, এতে কোনো ক্ষতি নেই।

এছাড়াও Phthalates, Formaldehyde এই জাতীয় উপকরণও এড়িয়ে যেতে বলা হয়। এই সময় অ্যাকটিভ ইনগ্রেডিয়েন্টযুক্ত অ্যাম্পুল ইউজ না করাটাই বেটার।

হবু মায়ের ত্বকের যত্ন কীভাবে নিতে হবে?

  • দিনের বেলায় ভালো কোনো মাইল্ড ক্লেনজার বা ফেইস ওয়াশ দিয়ে মুখ ধুয়ে নিতে হবে
  • এরপর ত্বকের ধরন বুঝে হাইড্রেটিং, অ্যান্টি অক্সিডেন্ট বা ন্যাচারাল ইনগ্রেডিয়েন্ট যুক্ত টোনার ব্যবহার করবেন
  • এরপর ত্বকে স্যুট করে এরকম কোনো ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন
  • ব্রড স্পেকট্রাম প্রেগনেন্সি সেইফ সানস্ক্রিন (এসপিএফ ৩০ বা ৫০) ব্যবহার করতে পারেন
  • যদি প্রয়োজন হয় তাহলে রিংকেলস এর জন্য আই ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন
  • সপ্তাহে একদিন উপটান বা প্রাকৃতিক উপাদানের ফেইস প্যাক লাগাতে পারেন

স্ট্রেচ মার্কস প্রিভেন্ট করতে করণীয় কি?

হবু মায়ের স্ট্রেচ মার্কস প্রতিরোধ করার জন্য গর্ভধারণের শুরু থেকেই পেট, থাই ও কোমরে ময়েশ্চারাইজার ক্রিম বা লোশন ব্যবহার করুন। স্ট্রেচ মার্কস দূর করার এখন মার্কেটে তেল, লোশন, অলিভ অয়েল, বডি বাটার পাওয়া যায় যেগুলো বেশ ভালো কাজে দেয়।

নতুন কিছু ট্রাই করার আগে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন

রেগুলার স্কিনকেয়ার রুটিন পরিবর্তন করা খুব সহজ কিছু নয়। কিন্তু নবাগত সন্তানের কথা চিন্তা করে লাইফস্টাইলে কিছু পরিবর্তন আনা-ই যায়, তাই না? অবশ্যই আগে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন, কোনো প্রোডাক্ট কেনার আগে প্রেগনেন্সি সেইফ কিনা সেটা দেখে নিন। গর্ভাবস্থায় ত্বকের যত্নে সিম্পল স্কিন কেয়ার রুটিন ফলো করতে পারেন। ভিটামিন ই, ভিটামিন বি৩, গ্রিন টি, অ্যালোভেরা, ফ্রুটস এক্সট্র্যাক্ট, অ্যান্টি অক্সিডেন্ট আছে এই ধরনের প্রোডাক্ট ইউজ করতে পারেন।

হবু মায়ের ত্বকের যত্নে কোন প্রোডাক্টগুলো এড়িয়ে চলতে হবে সে বিষয়ে আমরা কিছুটা ধারণা পেলাম। ত্বকের যত্ন নেওয়ার পাশাপাশি প্রচুর পানি পান করতে হবে। পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি হবু মায়ের শরীর ও ত্বককে সতেজ রাখতে সাহায্য করে। অনলাইনে অথেনটিক প্রোডাক্ট কিনতে পারেন শপ.সাজগোজ.কম থেকে অথবা সাজগোজের ৪টি শপ- যমুনা ফিউচার পার্ক, বেইলি রোডের ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার, উত্তরার পদ্মনগর ( জমজম টাওয়ারের বিপরীতে) ও সীমান্ত সম্ভার থেকেও বেছে নিতে পারেন আপনার পছন্দের প্রোডাক্টটি। আজ এই পর্যন্তই। নিরাপদে থাকুন, সব সময় হাসি খুশি থাকুন।

নেকেরই ধারণা জন্মের পর থেকে শিশুর যত্ন নিতে হয়। ব্যাপারটা আসলে তা নয়। গর্ভাবস্থা থেকেই শিশুর বিশেষ যত্নের প্রয়োজন। সেই সঙ্গে সবল বাচ্চা জন্ম দিতে হলে মায়েরও সুস্থ থাকাটা বেশ জরুরি। এ রকমই শিশু ও মায়ের যত্ন নিয়ে কিছু পরামর্শ দিয়েছেন শিশু-সার্জারি বিশেষজ্ঞ ডা. সোহেলী আলম।

মায়ের যত্ন

গর্ভাবস্থা থেকেই মায়ের পুষ্টির দিকে খেয়াল রাখতে হবে। কারণ মায়ের সঠিক পুষ্টি ও যত্নের উপর নির্ভর করছে একটি সবল শিশুর জন্ম।

অনেকেই মনে করেন মা বেশি খেলে বাচ্চা বড় হবে। সে ক্ষেত্রে জন্মের পর মায়ের সমস্যা হবে। তবে মায়ের জন্য মিনারেল, কাবোর্হাইড্রেটের মতো ৬টি উপাদানের প্রয়োজন। এই উপাদানগুলো যখন মায়ের শরীরে পরিমাণ মতো থাকবে তখনই একটি সুস্থ শিশুর জন্ম হবে।

গর্ভাবস্থায় মায়ের খেয়াল রাখাটাও বেশ জরুরি। এই সময় একজন মাকে ভারী জিনিস তুলতে দেওয়া যাবে না। স্বামীর সঙ্গে পরিবারের অন্য সদস্যদেরও সহানুভূতিশীল হতে হবে।

গর্ভাবস্থায় স্বামী-স্ত্রীর মিলন হওয়া উচিত নয়। বিশেষ করে থার্ড ত্রাইমেস্তারের (তৃতীয় স্তর) সময় একেবারেই নয়। নাহলে পানি ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ কাজ যেটা মাকে করতে হবে, সেটা হল মা অবশ্যই তার দুধের বোঁটার দিকে খেয়াল রাখতে হবে। কারণ বোঁটা যদি ভোতা থাকে তাহলে শিশুকে দুধ খাওয়াতে অসুবিধা হবে। সে জন্য বোঁটা টিপে টিপে ম্যাসাজ করে চোখা করতে হবে, যাতে শিশু ঠিকমতে দুধ পায়।

এছাড়াও খেয়াল রাখতে হবে বোঁটা ফেটে গেছে কি না। এ জন্য চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে। নইলে শিশুকে জন্মের পরপর দুধ খাওয়াতে গেলে সমস্যা হতে পারে।

ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী anti-natal চেকআপ করাতে হবে। বিভিন্ন ধরনের টিকা সময়মতো নেওয়াটা মায়ের জন্য বিশেষভাবে জরুরি।

এছাড়া যদি লেবার পেইন বা প্রসববেদনা নির্দিষ্ট সময় পার হয়ে যাওয়ার পরও না হয় তাইলে দ্রুত ডাক্তারের কাছে যেতে হবে।

শিশুর যত্ন

জন্মের পরপরই বাচ্চার গায়ের লেগে থাকা সাদা মতো অংশগুলো পরিষ্কার করে ফেলতে হবে। তার পায়খানা ও প্রস্রাবের রাস্তা ঠিক আছে কি না, বা চোখের সমস্যা আছে কি না খেয়াল করতে হবে।

অনেক সময় শিশুর খাদ্যনালী ঠিকমতো তৈরি হয় না। ফলে মুখ থেকে ফেনা বের হয়। তখন শিশুকে দ্রুত ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে হবে। এ ব্যাপারগুলো সাধারণত ডাক্তাররাই খেয়াল করে থাকেন।

নবজাতককে কাপড় দিয়ে ভালো করে মুড়িয়ে রাখা উচিত। তবে গরমের সময় হালকা কাপড় পরিয়ে রাখা ভালো। খেয়াল রাখতে হবে ঘাম যাতে না হয়। অনেক সময় ঘামের কারণে বাচ্চার ঠান্ডা লেগে যায়।

বাচ্চাকে সবসময় বুকের দুধ খাওয়াতে হবে। অনেক সময় দেখা যায়, প্রথমদিকে শিশু দুধ পায় না। এ জন্য তিনদিন অপেক্ষা করতে হবে। তবে বারবার টানতে দিতে হবে। আর দুদিক দিয়েই দুধ খেতে দিতে হবে। টানা একদিকে খেতে থাকলে অন্যপাশের বুকটা ভারী হয়ে যাবে।

কোনো কারণে যদি দুধ একপাশে জমতে থাকে তাহলে সেটা টিপে টিপে বের করে একটা বাটিতে করে নিয়ে ফ্রিজে রেখে দিতে হবে। এরপর বাচ্চাটিকে ছোট চামচ দিয়ে খাওয়াতে হবে।

ফিডার বা বোতলে দুধ খাওয়ার অভ্যাস একদম করা যাবে না। এই অভ্যাস হলে শিশু আর বুকের দুধ খেতে চাইবে না।

এভাবে টানা ছয়মাস শিশুকে শুধু বুকের দুধ খাওয়াতে হবে। আর কিছু খাওয়ানো যাবে না। এমনকি পানিও না। ছয়মাস পর থেকে বুকের দুধের পাশাপাশি শিশুকে ধীরে ধীরে অন্যান্য খাবার যেমন– ভাত, ডাল, সবজি, ডিম, মাংস, মাছ এসব খাওয়ানোর অভ্যাস করতে হবে।

সবসময় খেয়াল করতে হবে বাচ্চার মানসিক পরিবর্তনগুলো ঠিকমতো হচ্ছে কি না। যেমন পাঁচ থেকে ছয়মাস বয়সে বাচ্চা হাঁটার চেষ্টা করে। দেড় দুই বছর বয়সে কথা বলার চেষ্টা করে।

অনেক বাচ্চা আছে, যারা দেরিতে কথা বলে। তখন ডাক্তারের কাছে যাওয়া উচিত।

বাচ্চার ওজন ঠিকঠাক আছে কি না সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। জন্মের সময় একটি সুস্থ বাচ্চার যে ওজন থাকে, ছয়মাস পরে তার ওজন হয় দ্বিগুণ। এক থেকে দেড় বছর বয়সে ওজন তিনগুণ বেড়ে যায়।

এছাড়া শিশুর টিকাগুলো সময়মতো দেওয়া হচ্ছে কি না সেদিকও নজর রাখতে হবে। ছোটখাটো অসুখ যেমন বমি, পায়খানা, জ্বর– এগুলো হলে ডাক্তারকে জানাতে হবে কিংবা নিয়ে যেতে হবে। এরপর ডাক্তার শারীরিক অবস্থার উপর নির্ভর করে যে উপদেশগুলো দেবেন সেগুলো মেনে চলতে হবে।

শিশুর জন্মের আগে ও পরে যদি এইসব দিকগুলো ঠিকমতো খেয়াল করা হয় তাহলে আপনার শিশুটি অবশ্যই সুস্থ ও সবল থাকবে।

সন্তানের জন্মের পর বাবা-মায়ের বিভিন্ন দায়িত্ব বাড়তে থাকে। শিশুর ভালো-মন্দের দিকে খেয়াল রাখতে হয় তাঁদের। কিন্তু এই নতুন ভূমিকায় একাধিক বাধার সম্মুখীনও অভিভাবকদের হতে হয়। আর সেটা খুব অস্বাভাবিক নয়!
বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, শিশুর জন্মের পরে প্রথম এক সপ্তাহ খুব গুরুত্বপূর্ণ। এই প্রথম সপ্তাহে অনেক কিছুই শেখেন অভিভাবকরা। তাই প্রথম সাত দিনের জন্যে কয়েকটি বিশেষ টিপস দেন বিশেষজ্ঞরা। জেনে নিন আপনিও। 

সদ্য মা হওয়ার পরে অনভিজ্ঞ কোনও মহিলার পক্ষেই বোঝা সম্ভব নয়, তাঁর শিশু কেন কাঁদছে! তাই সন্তানকে কাঁদতে দেখলেই তাঁরা খুব ভয় পেয়ে যান। শিশুর কি খিদে পেয়েছে নাকি তাঁর ঘুম পেয়েছে কিংবা তাঁর কি কোনও শারীরিক অস্বস্তি হচ্ছে, এরকম নানা প্রশ্ন তাঁদের মনে আসতে থাকে। তাই শিশুর কান্নার ধরনের দিকে নজর রাখতে বলেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ খিদে পেলে একরকম শব্দ করে শিশু কাঁদে, ঘুম পেলে তার কান্নার শব্দ হয় অন্যরকম!

​শিশুর কান্নার ধরনে কী ভাবে বুঝবেন তার অভিব্যক্তি? জানতে এখানে ক্লিক করুন​

তাকে কী খাওয়ানো উচিত

জন্মের পর থেকেই শিশুকে শুধুমাত্র মাতৃদুগ্ধ খাওয়ানোর পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকরা। প্রয়োজনে ফর্মুলা মিল্ক খাওয়ানো যেতে পারে। সেক্ষেত্রে অবশ্যই আগে চিকিৎসকের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। তাই প্রথম এক সপ্তাহে তাঁর ‘ফিডিং প্যাটার্ন’-এর দিকে লক্ষ্য রাখতে এবং পর্যবেক্ষণ করতে হবে। কয়েক দিন যেতেই আপনি বুঝতে পারবেন দিনে কতবার তাকে খাওয়াতে হবে।

শিশুর কীসে অস্বস্তি হতে পারে

প্রথম সাত দিন বাবা-মাকে খুব সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়। শিশুর প্রতিটি মুভমেন্টের প্রতি নজর রাখতে হয় এই সময়ে। তার কান্নার ধরন এবং ফিডিং প্যাটার্নের দিকে যেমন খেয়াল রাখতে হবে, তেমনই এদিকেও নজর রাখা প্রয়োজন। তাকে কী ভাবে শোওয়ালে সে স্বস্তিবোধ করে এবং কতক্ষণ কোলে রাখলে তার ভালো লাগে, সেদিকে নজর রাখার দায়িত্ব আপনারই। প্রথম সাতদিন অবশ্য়ই এদিকে খেয়াল রাখুন।

ঘরোয়া টোটকায় ভরসা করা উচিত?

শিশু এবং তার মা’কে নিয়ে নানারকম ধারণা প্রচলিত রয়েছে। শিশুকে ‘ভালো রাখতে’ পরিবারের অন্যান্য সদস্য বিভিন্ন ঘরোয়া টোটকা কাজে লাগানোর পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

আপনি বিবেচনা না করে শিশুর উপর বা নিজের প্রতি কোনও ঘরোয়া টোটকা প্রয়োগ করবেন না। যে কোনও পদক্ষেপ করার আগে চিকিৎসকের সঙ্গে অবশ্য়ই আলোচনা করে নিন।

একটি রুটিন তৈরি করে নিন

বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রথম কয়েক সপ্তাহ শিশুকে চিনতে সময় লেগে যায় মায়ের। শিশুর যত্নের কথা মাথায় রেখে এবং নিজের কম্ফোর্টকে গুরুত্ব দিয়ে একটি রুটিন বানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করুন। এই সময়ে নবজাতককে দেখার জন্যে বাড়িতে প্রচুর লোক ভিড় করতে থাকেন। কিন্তু আপনি নিজের শরীরকে কষ্ট দিয়ে কোনও বাড়তি কাজ করতে যাবেন না। আপনিও মনে রাখবেন যে, শিশুকে ভালো রাখার দায়িত্ব যেমন আপনার আছেই, তেমনই আপনাকে নিজের খেয়ালও রাখতে হবে।

আরও পড়ুন: 
বেদে উল্লেখিত এই বিশেষ ১০ নাম আজও ট্রেন্ডিং, আদরের সোনার জন্যে সেরা নামটি বেছে নিন আপনিও
আরও পড়ুন: 
জন্মের ঠিক কতদিন পরে শিশুকে স্নান করাবেন, কী কী খেয়াল রাখতে হবে, জেনে নিন ঝটপট

সন্তান ভূমিষ্ট হওয়ার পর একটা আলাদা দায়িত্ব চলে আসে মা-বাবার ওপর। কী করলে সন্তান সুস্থ থাকবে, কীভাবে রাখলে সন্তানের কোনো সমস্যা হবে না এ নিয়ে সব সময় চিন্তায় থাকে বাবা-মা। বুকের দুধ খাওয়ানোর সময় কোনো সতর্কতা অবলম্বন করা লাগবে কিনা এ বিষয়েও অনেক সময় সংশয়ে থাকেন মা।

এসব সমস্যার সমাধান পেতে অনেক সময় ডাক্তার, পরিচিত বন্ধু-বান্ধব ও আত্মীয়দের কাছ থেকে প্রচলিত বা আধুনিক পরামর্শ পাওয়া যায়। কিন্তু দেখা যায় এসব পরামর্শ কারও সঙ্গে মিলছে তো কারও সঙ্গে সাংঘর্ষিক হচ্ছে। তখনই বিপাকে পড়েন বাবা-মায়েরা।

উদাহরণস্বরূপ, যুক্তরাষ্ট্রের ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক এমিলি ওস্টার অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় প্রচণ্ড দ্বিধা-দ্বন্দ্বের মধ্যে ছিলেন যে কোন পরামর্শটি তার সন্তান লালন-পালনের জন্য উপযুক্ত হবে।

এরপর তিনি সিদ্ধান্ত নেন সন্তানের যত্ন বিষয়ক যত ধরনের গবেষণা আছে সবগুলো তিনি যাচাই-বাছাই করবেন। যেই ভাবনা সেই কাজ, সব মেডিকেল জার্নালে চিরুণী অভযান চালিয়ে বিশ্লেষণ করে একটি বই লেখেন যার নাম দেন ‘গর্ভাবস্থায় কী করবেন আর কী করবেন না’।
 
তিনি সম্প্রতি আরও একটি বই লিখেছেন বলে জানিয়েছে বিবিসি বাংলা। এই বইটিতে সন্তানের লালন-পালন বিষয়ে তিনি মোট ১৩টি পরামর্শ দিয়েছেন। আর এ পরামর্শগুলো প্রত্যেক মা-বাবার জানা উচিত বলেও তিনি মনে করেন।

যে ১৩টি পরামর্শ দিয়েছেন সেগুলো হলো-
 
১. স্বল্প সময়ের জন্য শিশুর স্বাস্থ্য ভালো রাখতে বুকের দুধ অনেক উপকারী এমন অনেক তথ্য আছে কিন্তু গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব শিশুরা বুকের দুধ খায় তারা বিশেষ করে অ্যালার্জি, পেটের সমস্যা এবং কানে সংক্রমণের মতো সমস্যায় কম পড়ে। আবার বুকের দুধের দীর্ঘমেয়াদী উপকারিতা সম্পর্কে পর্যাপ্ত তথ্য গবেষকদের কাছে নেই। তবে, সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়ালে মায়েদের ব্রেস্ট ক্যান্সার হবার ঝুঁকি ২০-৩০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যায়।
 
২. অনেকেই মনে করেন যে সময়টাজুড়ে শিশু বুকের দুধ পান করেন সেই সময়টা অ্যালকোহল পান করা যাবে না। কিন্তু অধ্যাপক ওস্টার বলছেন, ওই সময়টাতে অ্যালকোহল পান করলে, রক্তে অ্যালকোহলের পরিমাণ যা থাকে সেই একই পরিমাণ থাকবে বুকের দুধেও। আর তাই যদি কোনো মা তার সন্তানকে অ্যালকোহল দিতে না চান তাহলে পান করার দুই ঘণ্টা পর সন্তানকে দুধ দেবেন।
 
৩. যেসকল মায়েরা বুকের দুখ খাওয়াচ্ছেন তারা চাইলে ডাক্তারের পরামর্শে বিষণ্নতারোধী ওষুধ খেতে পারবেন। এতে সন্তানের ওপরে কোনো ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে না। যদিও গবেষণায় দেখা গেছে বুকের দুধ খাওয়ানোর মধ্য দিয়ে প্রাকৃতিকভাবেই বিষণ্নতা কমে।
 
৪. যুক্তরাষ্ট্রের শিশু বিশেষজ্ঞদের সংগঠনের পরামর্শ, জন্মের পর অন্তত প্রথম ছয়মাস থেকে এক বছর যেন মা-বাবা তার শিশুদের একসঙ্গে একই ঘরে রাখে। এতে শিশুদের হঠাৎ মৃত্যুর হার রোধ করা সম্ভব। কিন্তু চিকিৎসকেরা বলছেন, একই ঘরে থাকার সুবিধা অল্প কয়েক মাসের মধ্যেই ফুরিয়ে যায়। এ বিষয়ে অধ্যাপক ওস্টার বলছেন, কোনো মা-বাবা যদি তার শিশুকে নিয়ে একই ঘরে থাকতে চান তাহলে যত দিন ইচ্ছা থাকতে পারবেন।
 
৫. অনেক মা এখনো তার ঘুমন্ত সন্তানকে পরিষ্কার কাপড় দিয়ে শক্ত করে বুকের কাছে বেঁধে রাখেন। এ বিষয়ে গবেষণায় দেখা গেছে এটা শিশুদের জন্য উপকারী, এর ফলে শিশু ভয় পেয়ে কেঁদে ওঠে না এবং শিশুর ঘুম ভালো হয়। তবে বুকের কাছে বেঁধে রাখার সময় শিশু যেন তার কোমর এবং পশ্চাৎদেশ ঠিকমতো নড়াচড়া করতে পারে সেটি নিশ্চিত করতে হবে।
 
৬. গবেষণায় দেখা গেছে প্রাপ্তবয়স্ক কোনো মানুষের সঙ্গে শিশুরা সোফায় বা যেকোনো জায়গায় ঘুমিয়ে পড়লে শিশু মৃত্যুর হার ২০-৬০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে। অনেক সময় অসচেতনতার কারণে প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের শরীরের নিচে চাপা পড়তে পারে বাচ্চারা। তাই এমনটি করতে নিষেধ করেছেন ওস্টার।

আরও পড়ুনঃ শিশুদের মোবাইল ফোন ব্যবহারে সতর্ক হওয়ার পরামর্শ
 
৭. সন্তান জন্মের পরবর্তী ছয় সপ্তাহ শারীরিক সম্পর্ক করা উচিত নয়। তবে গবেষণায় দেখা গেছে এর জন্য কোনো আদর্শ সময় নেই। এটি নির্ভর করে মায়ের শারীরিক অবস্থার ওপর।
 
৮. সন্তানকে অবশ্যই প্রয়োজনীয় সব টিকা দিতে হবে। সেই সঙ্গে মায়ের নিজের সুস্থতার জন্যও প্রয়োজনীয় টিকা ও অন্যান্য চিকিৎসা নিতে হবে।
 
৯. বাচ্চাকে ঘুমের প্রশিক্ষণ দেওয়া উচিত কিনা এ বিষয়ে অধ্যাপক ওস্টার অনেকগুলো গবেষণা বিশ্লেষণ করে যে তথ্য পেয়েছেন তা হলো বাচ্চাদের খুব অল্প বয়সেই ঘুমের একটি নিয়ম ঠিক করা উচিত। তাহলে বাকী কাজগুলো একটি নির্দিষ্ট নিয়মে চলবে।
 
১০. অনেকগুলো গবেষণায় দেখা গেছে, জন্মের পর শিশুদের কিছু সময় মায়ের সঙ্গে একান্তে কাটানো প্রয়োজন। ফলে একজন মায়ের মাতৃত্বকালীন ছুটি নেওয়ার ফলে সন্তান উপকৃত হয়।
 
১১. অনেক মা আছেন তাদের ব্যক্তিগত কাজের জন্য সন্তানকে সময় দিতে পারেন না যার ফলে তারা তাদের সন্তানকে ডে-কেয়ারে দেন। কিন্তু ডে-কেয়ারে দিলে সন্তানের সঙ্গে মায়ের সম্পর্ক দূর্বল হয়ে যায় এমন কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তারপরও সব সময় সন্তানকে সময় দিতে হবে।
 
১২. এখন প্রায়ই দেখা যায় সন্তানদেরকে টিভি দেখিয়ে খাওয়াতে হয়। এক্ষেত্রে তিন থেকে পাঁচ বছর বয়সী শিশুরা টিভি দেখে অনেক কিছু শিখতে পারে। তবে কোনো কোনো চিকিৎসক মনে করেন দুই বছরের কম বয়সী শিশুরা টিভি দেখলে চোখের ক্ষতি হতে পারে।
 
১৩. সন্তানদের পড়ানোর পড়ে সে সম্পর্কে তাদের আরও প্রশ্ন করা উচিত। এতে তাদের মধ্যে চিন্তা করার ক্ষমতা বাড়ে।
 
Home
E-Show
Live TV
Namaz
Blood
Job